প্রেক্ষাপট:
বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘকাল ধরে স্বৈরশাসন, বৈষম্য, দুর্নীতি ও একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। এই ধারাবাহিক সংগ্রামের চূড়ান্ত পরিণতি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান, যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটায়। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, আইনের শাসন ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এই ঘোষণাপত্র প্রণীত হয়।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতা:
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।
১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপব্যবহার।
বাকশাল ও একদলীয় শাসনের বিরূপ প্রভাব।
১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান ও সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন।
ফ্যাসিবাদী শাসনের সমালোচনা (২০০৯–২০২৪):
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদী, একনায়কতান্ত্রিক শাসন কায়েম।
গুম, খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ।
তিনটি প্রহসনের নির্বাচন (২০১৪, ২০১৮, ২০২৪) মাধ্যমে ভোটাধিকার বঞ্চনা।
বৈষম্যমূলক কোটা, দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার।
জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান:
ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দেশব্যাপী গণবিক্ষোভ।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ।
সহিংস দমন-পীড়নে বহু হতাহতের ঘটনা।
৫ আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন:
সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে ৮ আগস্ট ২০২৪ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন।
জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য:
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন।
ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পুনর্গঠন।
মানবাধিকার, আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ।
পরিবেশ ও জলবায়ু সহনশীল টেকসই উন্নয়ন।
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান।
ফ্যাসিবাদী শাসনে সংঘটিত গুম, খুন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার।
শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সুরক্ষা প্রদান।
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
ফ্যাসিবাদ ও একদলীয় শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ।
দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন সমাজ গঠন।
আইনের শাসন ও মানবাধিকারের নিশ্চয়তা।