রিপোর্টঃ আবদুল্লাহ আল মামুন
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, চীনের হাতে বর্তমানে প্রায় ৬০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ১,০০০ ছাড়াতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশে ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের সামরিক প্রস্তুতি অর্জনের লক্ষ্যে এই অস্ত্রভাণ্ডার সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হচ্ছে। যদিও চীন প্রকাশ্যে ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি বজায় রাখার কথা বলে, পশ্চিমা দেশগুলো আশঙ্কা করছে—প্রয়োজনে প্রথমেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে বেইজিং।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম দিকে চীনের কাছে আনুমানিক ৬০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। নিয়ন্ত্রণ, প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা: আক্ষরিক ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি অনুসরণের ঘোষণা দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষকদের মতে, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে (যেমন পারমাণবিক কমান্ড ধ্বংসের ঝুঁকি বা তাইওয়ান লড়াইয়ে বড় ধরনের পরাজয়), চীন পারমাণবিক অস্ত্র প্রথমে ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করতে পারে।
তাইওয়ান-নির্ভর কৌশলগত প্রস্তুতি
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে চীনের সেনাবাহিনীকে তাইওয়ান দখলের উপযোগী করতে হবে—এই দিকেই তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা উন্মুখ Reuters
অস্ত্র আধুনিকায়ন ও বর্ধিত ক্ষমতা
আনুমানিক ৩৫০টি নতুন ICBM সাইলো তৈরি হচ্ছে, পাশাপাশি কমান্ড সেন্টার ও আন্ডারগ্রাউন্ড বাংকারের উন্নয়ন চলছে। ReutersBusiness InsiderFederation of American ScientistsDawn
এটি রণকৌশলগত প্রস্তুতি ও পারমাণবিক প্রতিশোধের “launch-on-warning” সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। Defense News
সম্পূর্ণ নিউক্লিয়ার ত্রয়ী গঠনের লক্ষ্যমাত্রা
মাটির নীচে সাইলো (land-based), সাবমেরিন (sea-based), এবং বোমার (air-based): এই তিনটি মাধ্যমে সমান্তরাল ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, যদিও সাবমেরিন ও বোমার ভিত্তিক সেক্টরে এখনও অনেক উন্নয়ন বাকি। Federation of American Scientists+1Business InsiderWikipedia
স্কেল ও গতি: দ্রুততম সম্প্রসারণ
Stockholm International Peace Research Institute (Sipri) রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০০ টি ওয়ারহেড যোগ হচ্ছে। Dawn+1
বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা প্রতিযোগিতা
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বিশাল পারমাণবিক স্টকপাইল সামনে দেখতে, চীন নিজেকে একটি “world-class” প্রতিরক্ষামূলক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়; পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউরোপীয় অঞ্চলে চলমান নিরাপত্তা আশঙ্কাও ভূমিকা রাখছে ।Reuters+1
২০৩০ সালের দিকে: পেন্টাগন ও অন্যান্য বিশ্লেষকরা আশা করছেন যে, চীনের ওয়ারহেড সংখ্যা ১,০০০ ছাড়িয়ে যাবে। ReutersDefense NewsWikipedia+1
২০৩৫ সালের দিকে: SIPRI এবং FAS বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এটি ১,৫০০ ওয়ারহেড পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার তুলনায় এখনো কম—প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মাত্র। Business InsiderDawnWikipedia+1
চীনের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার দ্রুত সম্প্রসারণ: কেন তা উদ্বেগের কারণ
চীন গত বেশ কয়েক বছরে পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকীকরণ ও বিস্তারের ক্ষেত্রে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। SIPRI-র ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটি বর্তমানে ৬০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড ধারণ করছে, যা ২০২৩ সালপর্যন্ত প্রতি বছরে প্রায় ১০০টি বেড়েছে। Dawn+1Reuters
এই দ্রুত সম্প্রসারণ পেছনের কারণগুলো হলো:
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে সামরিকভাবে তাইওয়ান দখলের সক্ষমতা অর্জন।
প্রায় ৩৫০টি নতুন সাইলো এবং আধুনিক কমান্ড ও বাংকার সুবিধা নির্মাণ; launch-on-warning সিস্টেমে রূপান্তরসাধন। Business InsiderFederation of American ScientistsDefense News
ভবিষ্যতে, মাটির উপরে, সাবমেরিন ও বোমার ভিত্তিতে পরিপূর্ণ পারমাণবিক ত্রয়ী গঠন লক্ষ্য ঘোষিত। Federation of American ScientistsWikipedia
বিশ্ব নিরাপত্তা পর্যালোচনায়, যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগন এবং অন্যান্য গবেষণা সংস্থাগুলি অনুমান করে, চীনের ওয়ারহেড সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে ১,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে, এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রায় ১,৫০০ হতে পারে, যা মার্কিন ও রুশ মজুদের এক-তৃতীয়াংশ মাত্র। ReutersBusiness InsiderDawnWikipedia+2Wikipedia+2
যদিও চীন ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি বজায় রাখার দাবি করে, কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে—যদি পারমাণবিক প্রতিক্রিয়াশীল ক্ষমতা বা রাষ্ট্রীয় টেকসইতায় হুমকি দেখা দেয়—তাহলে প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার সম্ভবত বিবেচনায় আনা হতে পারে