আগামী সেপ্টেম্বর মাসে যৌথ সামরিক মহড়ার সময় জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের ‘টাইফুন’ নামের মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের অনুমতি দিয়েছে টোকিও। এ সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া। দেশ দুটি সতর্ক করেছে, এ পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। শনিবার (৩০ আগস্ট) আল জাজিরা ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, “আমরা একে আরেকটি অস্থিতিশীল করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখি। ওয়াশিংটন যেভাবে ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য স্বল্প ও মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে, এটি তারই অংশ।”
তিনি আরও জানান, জাপানে বা রাশিয়ার কাছাকাছি এলাকায় টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা মস্কোর জন্য সরাসরি কৌশলগত হুমকি। যদি জাপান সিদ্ধান্ত না বদলায়, তবে রাশিয়া ‘উপযুক্ত সামরিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা’ নিতে বাধ্য হবে। তার মতে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে এর দায়ভার সম্পূর্ণ টোকিওকেই বহন করতে হবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানকে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এশিয়ার কোনো দেশে মার্কিন টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের আমরা সবসময় বিরোধিতা করি। সাময়িকভাবে হলেও এসব অস্ত্র মোতায়েন করা উচিত নয়।”
তিনি জাপানকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে যোগ করেন, “জাপানকে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে হাঁটতে হবে। সামরিকীকরণ বাড়ালে প্রতিবেশী দেশ ও আন্তর্জাতিক সমাজের আস্থা আরও হারাবে।” এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকেও উল্টো পথে না গিয়ে গঠনমূলক কাজে শ্রম ও সম্পদ ব্যয় করার আহ্বান জানান তিনি।
রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ‘টাইফুন’ ব্যবস্থা মূলত এশিয়ায় বিভিন্ন জাহাজবিধ্বংসী অস্ত্র মোতায়েনের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। জাপানের গ্রাউন্ড সেলফ–ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাখা হবে হনশু দ্বীপের আইওয়াকুনি শহরে অবস্থিত মার্কিন মেরিন বিমানঘাঁটিতে। টোকিও থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৮৯০ কিলোমিটার।
‘টাইফুন’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার (৩০০ মাইল), তবে এর দীর্ঘপাল্লার সংস্করণও তৈরি করা হচ্ছে।
২০২৪ সালে প্রথমবার ফিলিপাইনে সামরিক মহড়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করলে চীন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। পরে ম্যানিলা ঘোষণা দেয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা কিনবে।
আগামী ১১ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের মধ্যে ‘রিজলিউট ড্রাগন’ নামের মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ মহড়ায় টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।