স্টাফ রিপোর্টারঃ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান চারদিনের সংঘাতের পর, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে ভারত থেকে, এমন দাবি করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী রোববার (১১ মে) এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেছেন। তিনি জানান, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাকিস্তান করেনি, বরং ভারতই এই প্রস্তাব দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ এই প্রস্তাবের মধ্যস্থতা করেছে।
জেনারেল চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "পাকিস্তান কখনও যুদ্ধবিরতির আবেদন করেনি। ৬ এবং ৭ মে রাতে ভারতীয়রা কাপুরুষোচিত হামলা চালানোর পর তারা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। পাকিস্তান খুব স্পষ্টভাবে তাদের জানিয়েছিল, আমরা যখন আমাদের প্রাপ্য প্রতিক্রিয়া দেব, তখনই যোগাযোগ করব।"
এছাড়া, তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব ভারতই দিয়েছিল, আর পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী প্রমাণ করেছে যে তারা কখনো আগ্রাসন মেনে নেবে না। তিনি বলেন, "আমরা কখনোই আগ্রাসনের দিকে তাকাতে চাই না, কিন্তু আমাদের জাতির রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত।"
কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও পাকিস্তান তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। জেনারেল চৌধুরী দাবি করেন, কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বিরোধ এবং এটি জাতিসংঘ সনদ ও কাশ্মীরিদের ইচ্ছার ভিত্তিতে সমাধান হওয়া উচিত। তিনি বলেন, "ভারত কাশ্মীরকে অভ্যন্তরীণ সমস্যা হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইলেও এটি এখনও জাতিসংঘে বিবেচনাধীন একটি আন্তর্জাতিক বিরোধ। ভারতের একতরফা সাংবিধানিক পরিবর্তন এবং দমন-পীড়ন কাশ্মীরের বাস্তবতা পরিবর্তন করতে পারবে না।"
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আরও জানায়, তাদের হেফাজতে কোনও ভারতীয় পাইলট নেই এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তিনি বলেন, "এগুলো সবই একটি প্রচারণার অংশ এবং একাধিক মিথ্যা উৎস থেকে তৈরি করা হয়েছে।"
এদিকে, সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, তারা শান্তিপ্রিয় জাতি হলেও, আগ্রাসনের সঠিক জবাব দিতে জানে। ৬ থেকে ৭ মে রাতে ভারতের হামলায় নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের শহীদ হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে।
এটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত পুরো অঞ্চলের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে, এবং পাকিস্তান বারবার শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।