স্টাফ রিপোর্টারঃ অ্যাপল এখন এমন একটি ভবিষ্যতপ্রযুক্তির ওপর কাজ করছে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা শুধুমাত্র মস্তিষ্কের সিগন্যাল ব্যবহার করে আইফোনসহ অন্যান্য ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এটি অনেকটাই এলন মাস্কের নিউরালিংক-এর মতো ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস প্রযুক্তির অনুকরণে তৈরি হচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপল এমন একটি স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করতে চায়, যা ব্যবহারকারীর মস্তিষ্ক থেকে আসা সিগন্যাল বুঝে ডিভাইসে কমান্ড কার্যকর করতে পারবে—কোনো স্পর্শ বা শারীরিক নড়াচড়ার প্রয়োজন হবে না।
এই প্রযুক্তি মূলত তাদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে, যারা এএলএস বা মেরুদণ্ডের গুরুতর সমস্যার কারণে হাত ব্যবহার করতে অক্ষম। অ্যাপল এই উদ্ভাবনে কাজ করছে সিনক্রোন নামের একটি স্টার্টআপের সঙ্গে। সিনক্রোনের তৈরি ‘স্টেনট্রড’ নামের ছোট একটি ইমপ্লান্ট, যা মস্তিষ্কের মোটর কর্টেক্সের সংলগ্ন শিরায় স্থাপন করা হয়, সেখান থেকে সিগন্যাল সংগ্রহ করে আইফোন, আইপ্যাড বা Vision Pro-এর মতো ডিভাইস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
একজন এএলএস রোগী মার্ক জ্যাকসন এই ইমপ্লান্ট ব্যবহার করে অ্যাপলের Vision Pro হেডসেটে ভার্চুয়াল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়েছেন এবং এখন ধীরে ধীরে আইফোন ও আইপ্যাডও নিয়ন্ত্রণ শিখছেন। যদিও প্রযুক্তিটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে এবং স্পর্শভিত্তিক নিয়ন্ত্রণের তুলনায় ধীরগতি সম্পন্ন, তবে এটি নিঃসন্দেহে এক বিপ্লবের সূচনা।
অ্যাপল আশা করছে ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস স্ট্যান্ডার্ড চালু করতে পারবে। সিনক্রোন এখন পর্যন্ত ১০ জন রোগীর শরীরে স্টেনট্রড ইমপ্লান্ট স্থাপন করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১.৫ লাখ মানুষ যারা গুরুতর চলাচল সমস্যায় ভোগেন, তারা এই প্রযুক্তির সরাসরি সুবিধাভোগী হতে পারেন। যদিও বাণিজ্যিক অনুমোদন ২০৩০ সালের দিকে মিলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সিনক্রোন-এর সিইও টম অক্সলে আশা প্রকাশ করেছেন, এর আগেই তারা তা অর্জনে সক্ষম হবেন।