রিপোর্টঃ আবদুল্লাহ আল মামুন, নির্বাহী সম্পাদক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ১২টি প্রধান সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকি তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। ডাকসুতে মোট ২৮টি পদ রয়েছে, যার মধ্যে সদস্যপদ ১৩টি। এই পদগুলির ফলাফল ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হচ্ছে।
বিজয়ী প্রধান প্রার্থীরাঃ
-
সহসভাপতি (ভিপি): আবু সাদিক কায়েম (ছাত্রশিবির)
-
সাধারণ সম্পাদক (জিএস): এস এম ফরহাদ (ছাত্রশিবির)
-
সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস): মুহা মহিউদ্দীন খান (ছাত্রশিবির)
-
মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক: ফাতেমা তাসনিম জুমা (ছাত্রশিবির)
-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক: ইকবাল হায়দার (ছাত্রশিবির)
-
কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক: উম্মে ছালমা (ছাত্রশিবির)
-
আন্তর্জাতিক সম্পাদক: জসীমউদ্দিন খান (ছাত্রশিবির)
-
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ (স্বতন্ত্র)
-
গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক: সানজিদা আহমেদ তন্বি (স্বতন্ত্র)
-
ক্রীড়া সম্পাদক: আরমান হোসেন (ছাত্রশিবির)
-
ছাত্র পরিবহন সম্পাদক: আসিফ আব্দুল্লাহ (ছাত্রশিবির)
-
সমাজসেবা সম্পাদক: যুবাইর বিন নেছারী (স্বতন্ত্র)
-
ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক: মাজহারুল ইসলাম (ছাত্রশিবির)
-
স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক: এম এম আল মিনহাজ (ছাত্রশিবির)
-
মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক: মো. জাকারিয়া (ছাত্রশিবির)
প্রাথমিক ফলাফলের বিশদঃ
ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে আবু সাদিক কায়েম ১৪,০৪২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫,৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা ৩,৩৮৯ ভোট, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন ৩,৮৮৪ ভোট পেয়েছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে এস এম ফরহাদ ১০,৭৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫,২৮৩ ভোট। এছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪,৯৪৯ ভোট পেয়েছেন।
সহসাধারণ সম্পাদক পদে মুহা মহিউদ্দীন খান ১১,৭৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ছাত্রদলের প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫,০৬৪ ভোট। বৈষম্যবিরোধী প্রার্থী আশরেফা খাতুন পেয়েছেন ৯০০ ভোট।
নির্বাচনের ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিকভাবে ফলাফল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ঘোষণা করা শুরু হয়।
নির্বাচনের দিন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। ভোট গণনার প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা প্রায় সব কেন্দ্রে তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
এই ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিতে ছাত্রশিবিরের প্রভাবকে আরও দৃঢ় করবে। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয় প্রমাণ করে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল এখনও বহু-বিভক্ত এবং বিভিন্ন মতাদর্শের উপস্থিতি রয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও কিছু বিতর্ক এবং অভিযোগও ওঠেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সতর্কতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে।