ইনভেস্টিগেটিভ করেসপন্ডেন্টঃ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছেন, এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-কে পুনর্গঠন করা হবে।
তিনি জানান, র্যাবের কাঠামো ও কার্যক্রম নতুনভাবে সাজাতে ইতোমধ্যেই একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি র্যাবের আধুনিকায়ন, দায়বদ্ধতা ও মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে বাহিনীটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সুপারিশ প্রদান করবে। র্যাবের কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন সময় দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশের নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে এই পুনর্গঠন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে পুলিশের হাতে কোনো “মারণাস্ত্র” (lethal weapon) থাকবে না। পুলিশের দায়িত্ব হবে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তবে তা হবে সুনির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি ও জনবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে। প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে পুলিশ নন-লেথাল (non-lethal) অস্ত্র ও সরঞ্জাম ব্যবহার করবে, যেমন—রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, জলকামান প্রভৃতি। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পুলিশের ভূমিকা আরও মানবিক ও দায়বদ্ধ করে তোলার লক্ষ্যে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়েছে।
ঈদুল আজহার আগেই তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে বলে স্পষ্ট নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা। তবে তিনি একই সঙ্গে শ্রমিকদের 'অবৈধ' দাবি বা অযৌক্তিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন।
গরুর হাটে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, “প্রতিটি হাটে ন্যূনতম ১০০ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন করতে হবে।” এছাড়া যাত্রীদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে পরিবহন খাতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি।
রাস্তাঘাট ও গণপরিবহনে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ, বিআরটিএ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সার্বিকভাবে এই ঘোষণাগুলোর মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল ও নীতিমালার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।